সংগীত সম্পর্কে জানুন

সংগীত সম্পর্কে জানুন



সংগীত
সংগীত সংগীত দ্বারা গীত, বাদ্য, নৃত্য এই তিনটি বিষয়ের সমাবেশকে উল্লেখ করা হয়। গীত এক ধরনের শ্রবণযোগ্য কলা যা সুসংবদ্ধ শব্দ ও নৈশব্দের সমন্বয়ে মানব চিত্তে বিনোদন সৃষ্টি করতে সক্ষম। স্বর ও ধ্বনির সমন্বয়ে গীতের সৃষ্টি। এই ধ্বনি হতে পারে মানুষের কণ্ঠ নিঃসৃত ধ্বনি, হতে পারে যন্ত্রোৎপাদিত শব্দ অথবা উভয়ের সংমিশ্রণ। কিন্তু সকল ক্ষেত্রে সুর ধ্বনির প্রধান বাহন। সুর ছাড়াও অন্য যে অনুষঙ্গ সঙ্গীতের নিয়ামক তা হলো তাল।

অর্থযুক্ত কথা, সুর ও তালের সমন্বয়ে গীত প্রকাশিত হয়। সুর ও তালের মিলিত ভাব এ বাদ্য প্রকাশিত হয়। ছন্দের সাথে দেহ ভঙ্গিমার সাহায্যে নৃত্য গঠিত ।

ইতিহাস
পাথরযুগের মানুষও সঙ্গীত গাইতো। সম্ভবত প্রথম সঙ্গীত তৈরির চেষ্টা হয়েছিল শব্দ ও ছন্দ দ্বারা প্রকৃতির সাহায্যে।

সঙ্গীতের স্বরলিপি
সংগীত বা সুর বা স্বর এর প্রকাশ পদ্ধতিতে সাত (৭) টি চিহ্ন ( সংকেত ) ব্যবহৃত হয়, যথা :

সা রে গা মা পা ধা নি

এই সাতটি চিহ্ন দ্বারা সাতটি কম্পাংক নির্দেশ করা হয় । এছাড়াও আরও ৫টি স্বর রয়েছে ; যাদেরকে বিকৃত স্বর বলা হয় । যথা :

ঋ জ্ঞ ক্ষ ণ

সঙ্গীত শিল্পের বাণিজ্যিক প্রসার
প্রাচীনকাল থেকে এ বঙ্গঅঞ্চলে কীর্তন বা ঈশ্বরের নামে গান করার প্রচলন চলে আসছে। চর্যাগীতির পরে বাংলা সঙ্গীতে উল্লেখযোগ্য হয়ে আছে নাথগীতি। যদিও সঙ্গীতকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট হয়েছে এক ধরণের ব্যবসায়। এতে সঙ্গীত রচনা করে গ্রাহক কিংবা প্রচার মাধ্যমে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এর সাথে জড়িত রয়েছে বিভিন্ন রেকর্ড কোম্পানী, ব্রান্ড এবং ট্রেডমার্ক সহযোগে লেবেল এবং বিক্রেতা। ২০০০ সালের পর থেকে গানের শ্রোতার সংখ্যা অসম্ভব আকারে বৃদ্ধি পেয়েছ। শ্রোতারা ডিজিটাল মিউজিক ফাইলগুলোকে এমপি-থ্রী প্লেয়ার, আইপড, কম্পিউটার এবং অন্যান্য বহনযোগ্য আধুনিক যন্ত্রে সংরক্ষণ করছেন। গানগুলো ইন্টারনেট থেকে বিনামূল্যে কিংবা ক্রয় করে সংগ্রহ করা যায়। ডিজিটাল মাধ্যমে গান সংগ্রহ ও দেয়া-নেয়ার মাধ্যমে বর্তমান সঙ্গীত শিল্প প্রসারিত হয়েছে।

তবে ইন্টারনেট থেকে অবাধে বিনামূল্যে গান ডাউনলোড করার ফলে গানের সিডি বিক্রয়ের ব্যবসায় এক ধরণের হুমকির মুখে রয়েছে। এর ফলে বাণিজ্যিক শিল্পীরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছেন না।
গীতিকার
সংগীত গীতিকার (ইংরেজি: Lyricist) হলেন যিনি নির্দিষ্ট ভাবে গানের কথা লেখেন। গীতিকাররা গীতিকবি হিসেবেও পরিচিত। গানের ক্ষেত্রে গীতিকাররা মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। কারণ তাদের রচিত গীত থেকে সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালকরা সঙ্গীতশিল্পীদের দিয়ে গানে সুর বাঁধেন।



গীতিকার-সুরকার
একজন গীতিকার যখন গীত রচনা ও সুর করার কাজটি করেন তখন তাকে গীতিকার-সুরকার বলে। এক্ষেত্রে গীতিকার গান লিখে প্রয়জনীয় যন্ত্র, যেমন - বেহালা, তবলা, কীবোর্ড, গীটার ব্যবহার করে সুর তৈরি করেন।

গীতিকার-শিল্পী
একজন গীতিকার যখন গান লেখা এবং গান গাওয়ার কাজটি করেন তখন তাকে গীতিকার-শিল্পী বলা হয়। গীতিকার-শিল্পী অন্য কোন সুরকার বা সঙ্গীত পরিচালক কর্তৃক তার লিখিত গানে কণ্ঠ দিয়ে থাকেন।

সহযোগী গীতিকার
যখন একই গানের কথা দুই বা ততোধিক গীতিকার রচনা করেন তখন তাদেরকে সহযোগী গীতিকার বলে।
সুরকার
সুরকার হল যিনি কোনো সঙ্গীতের সুর তৈরী করেন বা লেখেন;তা হতে পারে কন্ঠসঙ্গীত(গায়কের ক্ষেত্রে),বাদ্যসঙ্গীত (বাদ্যবাদকের ক্ষেত্রে)।অর্থাত্‍ সঙ্গীতটি কীভাবে গাওয়া হবে, কোথায় টান দিতে হবে, কোথায় থামতে হবে তা যিনি রচনা করেন তিনিই মূলত সুরকার।তবে বিস্তৃতভাবে যিনি কোনো সঙ্গীতের বাদ্যযন্ত্র(যেমনঃগিটার,তবলা,ঢোল,বাঁশি ইত্যাদি) বাজান বা তাতে অবদান রাখেন তাকেও সুরকার বলা হয়।


সঙ্গীতশিল্পী
সংগীত গাওয়া বা উদগাতা বলতে গলার সাহায্য শব্দ সৃষ্ট করার কর্মকে এবং সুর ও ছন্দের সাহায্য কথাকে নিয়মিতভাবে আগানোকে বোঝায়। যে ব্যক্তি গান গায় তাকে গায়ক বা ভোকালিস্ট বলে। গায়ক যে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন তা এককভাবে কোন সাহায্য ছাড়া অথবা বিভিন্ন সঙ্গীতজ্ঞদের এবং বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে গাওয়া যেতে পারে এমকি একটা পূর্ণাঙ্গ সিম্ফোনি অর্কেস্ট্রা বা বড় সঙ্গীত দলের মাধ্যমে। গান গাওয়া আসলে হতে পারে অনেক লোক মিলে কোরাসে বা নানা বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে যেমন রক ব্যান্ডে যেভাবে গাওয়া হয়। গান গাওয়াটা সাধারণভাবেও হতে পারে আনন্দের জন্য যেমন শাওয়ারে গান গাওয়া বা কারাওকেতে গান করা; আবার এটা প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও হতে পারে যেমন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বা পেশাদারভাবে মঞ্চে বা রেকর্ডিং স্টুডিওতে। শৌখিন বা পেশাদারভাবে গান গাওয়াতে দরকার হয় বিভিন্ন নির্দেশনা এবং নিয়মিত অনুশীলন।পেশাদার গায়করা তাদের সংগীত জীবন গড়ে তোলে সাধারণত একটা নির্দিষ্ট ধারার সঙ্গীতে যেমন ক্ল্যাসিক্যাল বা রক এবং তারা সংগীতের চর্চা করে তাদের সারা সঙ্গীত জীবন জুড়ে গানের গুরুর মাধ্যমে।



সঙ্গীত পরিচালক
সঙ্গীত পরিচালক (ইংরেজি: Music Director) হলেন ঐ ব্যক্তি যিনি যন্ত্রসঙ্গীত দল, ব্যান্ড দল, চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, বেতার, বিদ্যালয়, কলেজ বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের গান পরিচালনা করে থাকেন। তিনি শুধুমাত্র গান পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন, কোন দল বা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কেউ নন।


যন্ত্রসঙ্গীত
যন্ত্রসঙ্গীতের ক্ষেত্রে সঙ্গীত পরিচালক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ প্রায় সকল দেশেই একজন সঙ্গীত পরিচালক যন্ত্রসঙ্গীত পরিচালনা করে থাকেন। সঙ্গীত মঞ্চে ও অপেরায় সঙ্গীত পরিচালক সব কিছু পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন। জর্জ জেল প্রথম ব্যক্তি যিনি ১৯৪৬ সালে যন্ত্রসঙ্গীতের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

চলচ্চিত্রের গান
চলচ্চিত্রের গান, বিশেষ করে উপমহাদেশের ভারত ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে, যেখানে চলচ্চিত্রে গান ব্যবহৃত হয়, সেসব ক্ষেত্রে সঙ্গীত পরিচালক বিদ্যমান থাকেন।[১] চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালক বিভিন্ন সঙ্গীত যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে গান ধারণ করেন, ধারণকৃত গান পুনঃসংযোজন-বিয়োজন করেন।

টেলিভিশন ও বেতার
টেলিভিশন ও বেতারের সঙ্গীত পরিচালক বা রেকর্ড প্রোডিউসার টেলিভিশন ও বেতারের জন্য গান ধারণ করেন। তারা টেলিভিশন ও বেতার কর্তৃপক্ষের সাথে আলচনা সাপেক্ষে কোন গান রেকর্ড করতে হবে কিনা, কখন কোন গান পরিবেশন করা হবে, কতোটুকু পরিবেশন করা হবে তা নির্ধারণ করেন ও সে অনুযায়ী কাজ করেন।

☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "সংগীত সম্পর্কে জানুন "

Post a Comment

যোগাযোগ ফর্ম

Name

Email *

Message *